কুড়িগ্রামে সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ভর্তির অর্থ ব্যাংকে জমা না করেই আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগি অভিযোগকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়ী বাজার সংলগ্ন সাইফুর রহমান সরকারি কলেজ ২০১৮ সালে জাতীয়করণ হয়। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ৩১ অক্টোবর ২০২২ সালে অবসর গ্রহণ করেন এবং অধ্যক্ষ অবসর গ্রহণকালে বিধি বহির্ভূতভাবে তার ছোট ভাই জাকির হোসেনকে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের দাপটে কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়। ২০২২-২৩ অর্থ-শিক্ষাবর্ষের জেনারেল শাখায় ২শত ২২জন ও বিএম শাখায় ৮৮জন মোট ৩শত ১০জন এবং ২০২৩-২৪ অর্থ-শিক্ষাবর্ষের জেনারেল শাখায় ২শত ২৯জন ও বিএম শাখায় ১শত জন মোট ৩শত ২৯জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাবদ বিধি বহির্ভূতভাবে রশিদ বই ছাড়াই প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে কমার্স ও মানবিক বিভাগে ২ হাজার ২ শ’ ৬০ টাকার স্থলে ২হাজার ৫শত টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগে ২ হাজার ৮শ’ ২০ টাকার স্থলে ৩হাজার ৫শত টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভর্তি করায়। বিধি অনুযায়ী ভর্তির অর্থ ব্যাংকে জমা করার কথা থাকলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনগড়াভাবে আংশিক টাকা জমা করে অবশিষ্ট টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া যায়। সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন স্যার ক্ষমতাসীন দলের দাপটে একের পর এক অনিয়ম করেই চলছেন। কলেজে ভর্তির অর্থ ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাত করেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর দিয়েছি। অতিরিক্ত ভর্তি ফি নেয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে একই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আনিছুর রহমান জানান, অনেকের কাছে অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে শুনেছি তবে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু কম নিচ্ছে। সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন জানান, অভিযোগের কথাগুলো সঠিক নয়। গতকাল কলেজের শিক্ষার্থীরা সকালে অভিযোগের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মাহাতাব হোসেন জানান, সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু সাইফুর রহমান কলেজটি সরকারি সেহেতু বিষয়গুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নিতে পারেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহনুমা তারান্নুম জানান, আমি আজ ছুটিতে আছি। অভিযোগের বিষয়ে জানি না। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে এখনো কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।