প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অপরাধটা কী করেছি? আমার কী এটাই অপরাধ, মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করেছি। আর সেই জায়গাগুলোতেই হামলা করতে হবে।’ শনিবার সকালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশনে (পঙ্গু হাসপাতাল) আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই ২০০৮ সাল আর ২০২৪ এর বাংলাদেশ তো এক না। বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান তো উন্নত হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি কত উপরে উঠে গিয়েছিল এবং এটা মনে হল, আর কিছুই না বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়ে বাংলাদেশকে আবার ভিক্ষুকের জাতি করে দেয়া। এটা বোধহয় এর (সহিংসতা) পেছনের ষড়যন্ত্র। সেটাই হচ্ছে সব থেকে দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, ‘আজকে এতগুলো মানুষের জীবনের ক্ষতি হলে, এতগুলো পরিবারের ক্ষতি হল, এর দায়-দায়িত্ব কাদের? তাদের বিচার এই দেশের মানুষের করতে হবে।’ শনিবার সকালে পঙ্গু হাসপাতালে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। তিনি আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ড. কাজী শামীম উজ্জামান আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। শেখ হাসিনা আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী আহতদের অবস্থা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত এসব ভবন পরিদর্শন করেন তিনি। এই সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। সকালে সেতু ভবনে প্রবেশের পর এর বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দেখেন প্রধানমন্ত্রী। পরে মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন। সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবন দু’টির ধ্বংসযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। একইসঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ধ্বংসযজ্ঞও পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশনে (পঙ্গু হাসপাতাল) আহতদের দেখতে যান।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই কয়েকশ’ দুষ্কৃতকারী সেতু ভবনে প্রবেশ করে এটি ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় অনেক যানবাহন ও মোটরবাইক ভাঙচুর, বিভিন্ন শেড ও কক্ষ তছনছ এবং আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। একইদিন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে হামলা করা হয়।