দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের ওপর সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাংবিধানিকভাবেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য বলে মন্তব্য করে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। ২০১৮ সালে দেওয়া এক রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি রোববার (২২ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। রোববার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেছেন, গত সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপির ৫ নেতার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুর্নীতি মামলার সাজা স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত শুনানি করে তাদের আবেদন খারিজ করেন। ফলে তাদের সেই সাজা বহাল রয়েছে। এর পরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একজনের (বিএনপি নেতা আমান) আপিল নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বাকি ৪ জনের মামলা এখনো হাইকোর্টে বিচারাধীন। ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর দুর্নীতির দায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে আমান উল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার করা আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। সে আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে আজ। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দিয়েছিলেন এ আদেশ। তখন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ক্ষেত্রে আদালত সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হলে আপিল বিভাগে তা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানই এখানে প্রাধান্য পাবে। খুরশীদ আলম খান আরও বলেন, দুই বছরের বেশি সাজা হলে সাজা মাথায় নিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে আদালত অভিমত দিয়েছেন। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন, আবেদনকারী জামিনে আছেন, জরিমানার আদেশ স্থগিত হয়েছে -এসব দণ্ড বা সাজা স্থগিতের যুক্তি হতে পারে না বলে জানিয়েছেন আদালত। সংবিধান সর্বোচ্চ আইন। দণ্ডিত সাজাপ্রাপ্তদের নির্বাচন করার বিষয়ে সংবিধানের ৬৬ (২)(ঘ) অনুচ্ছেদে বাধা আছে।