ঢাকাবুধবার , ২১ জুন ২০২৩
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দেশের মানুষের জান-মাল ও ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ২১, ২০২৩ ৮:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বর্তমানে দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক, আলেম-উলামা কারোর জানমাল ও ইজ্জত-আবরুর কোনো নিরাপত্তা নেই। যখন তখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাসা-বাড়িতে হানা দিয়ে নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করছে এবং সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। শুধু তাই নয়, আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হয়ে জেল থেকে বের হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে পুনরায় গ্রেফতার করে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে তাদের কারাগারে বন্দি করে রাখছে, যা আদালত অবমাননার শামিল ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সমাপ্তি অধিবেশনে দেশের আইন-শৃঙ্খলা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গৃহীত এক প্রস্তাবে এসব বিষয় উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য যে, আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমানকে প্রায় ৭ মাস যাবৎ, নায়েবে আমীর প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল জনাব এটিএম আজহরুল ইসলামকে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর যাবৎ অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করা সত্ত্বেও তাঁকে মুক্তি না দিয়ে জামিন স্থগিত করে রাখা হয়েছে। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার উচ্চ আদালত থেকে ধারাবাহিকভাবে ৪ বার জামিন লাভ করা সত্ত্বেও সরকার তাঁকে মুক্তি দিচ্ছে না। তিনি যতবারই জামিনপ্রাপ্ত হচ্ছেন, সরকার ততবারই উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অম্যান্য করে তাঁকে জেলখানায় বন্দি করে রেখেছে। এমনিভাবে নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম ২ বার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ২ বার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব শাহজাহান চৌধুরী ১ বার জামিন লাভ করা সত্ত্বেও সরকার তাদেরকে মুক্তি দেয়নি। এই ধরনের ঘটনা সারা দেশে অহরহ ঘটছে।
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের এখনো প্রায় তিনশতাধিক নেতা-কর্মী বিনাবিচারে বন্দি রয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব মুহাম্মাদ সেলিম উদ্দিন আড়াই মাস যাবৎ ও সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেক ম-ল প্রায় ৮ বছর যাবৎ কারাগারে আটক রয়েছেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সরকারের এহেন ন্যক্কারজনক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আল আযামী ও ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসিম আরমানকে প্রায় ৭ বছর যাবত গুম করে রাখা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২৫ জন নেতা-কর্মীকে অপহরণ ও গুম করে রাখা হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১ লক্ষ ৮ হাজার ৭০৯ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে ৯৬ হাজার ৯৩ জনের ওপর, শারীরিকভাবে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে ৫ হাজার ২০৪ জনকে। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে ২৩ হাজার ৮০৯টি। বর্তমান সরকার এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করলেও তাতে সরকারের টনক নড়ছে না।
গত ৬ জুন ঢাকা মহানরী গোয়েন্দা পুলিশ সন্দেহভাজন আলাল দেওয়ান নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ১০দিন পুলিশের হেফাজতে রাখার পর তার মৃত্যু হয়। এই হত্যাকা-ের জন্য তার পরিবার-পরিজন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০২০ সাল থেকে চলতি ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ২২৩ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ১১০টি মামলা করা হয়েছে এবং ৫৪ জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। সভা-সমাবেশ ও মিছিল করার অধিকার ক্রমান্বয়ে সংকুচিত করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ঢাকার বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার তারিখ ৯৮ বার পেছানো হয়েছে। এ অবস্থায় কোনো দেশ চলতে পারে না।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা মানবাধিকার ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে আসন্ন ঈদুল আজহার পূর্বেই আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ারসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীকে অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে মুক্তি এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবার-পরিজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।”

%d bloggers like this: