নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক (কমন) মামুন আতংক দেখা দিয়েছে। তার ভয়ে অন্যান্য কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবে সরকারী দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। সহকারী পরিচালক মামুন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশ্রয় ও লালন পালন করে অফিসে একটি ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছেন বলেও দাবী করা হয়েছে। তিনি নিজেই ঠিকাদারী ব্যবসা করেন এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি তার পরোক্ষ ইন্ধনে একদল সন্ত্রাসী ঠিকাদারী কাজের জন্য ভবনে প্রবেশ করে কন্ট্রোলার অব মেরিটাইম এডুকেশন ক্যাপ্টেন সাইদ আহমেদ এর রুমে গিয়ে তাকে গালাগালি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেছেন বলে জানাগেছে। অথচ: এ বিষয়ে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম।
এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সরকারী চাকুরী শৃংক্ষলা বিধি ভঙ্গ করে সহকারী পরিচালক (কমন) মামুন দীর্ঘদিন যাবত নামে বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসা করছেন। কেবল ঠিকাদারীই নয়, তিনি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অফিসে এনে তাদের আপ্যায়ণ করেন এবং অন্যান্য অফিসারদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করেন। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সাথে তার বিশেষ লেনদেন সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে অধিদপ্তর কোন টেন্ডার আহবান করলেই সহকারী পরিচালক মামুন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে টেন্ডারের কাজ হাতিয়ে নেন। টেন্ডারের সাথে যুক্ত কোন কর্মকর্তা তার কথা মত ফাইল ওয়ার্ক না করলেই তিনি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের কল করে অফিসে ডেকে এনে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। তিনি তার বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে কাজ দিতে টেন্ডার কমিটিকে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার কথা মত কাজ না দিলে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করেন। তারই চুড়ান্ত রূপ ছিল সেদিনের ঘটনা। ওই দিনের সকল ঘটনার ভিডিও বা সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে।
আরও জানা গেছে, সহকারি পরিচালক মামুন মতিঝিলে অফিস থাকতে নামাজের জায়গার কার্পেটের ভুয়া বিল বানিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৯ সালে তিনি নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ক্রকারিজ এর প্রায় ১০ লক্ষ টাকার বিল এক হেড অফিসের বাজেট ও ডোমলব প্রকল্পের বাজেট থেকে দুইবার প্রদান করেন। ২৫ হাজার টাকার নিচের সকল কেনাকাটা তিনি তার বেনামি প্রতিষ্ঠান ফিরোজ এন্টারপ্রাইজ, আদি সফট প্রমুখ নামে নিজেই স্বাক্ষর করে চেক প্রদান করেন। যেগুলোর সিল তার রুমেই সংরক্ষিত রয়েছে।
তিনি দশম গ্রেডের কর্মকর্র্ত হলেও প্রভাব খাটিয়ে ষষ্ঠ গ্রেডের কর্মকর্তার জন্য সংরক্ষিত এসি রুম দখল করেছেন। এই রুমের বরাদ্দপ্রাপ্ত সপ্তম গ্রেডের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো: শমসের আলীকে জোর পুর্ব্বক বের করে দিয়েছেন। মো: শমসের আলী এখন ছোট একটা নন এসি রুমে অফিস করেন। মামুনের সকল দুই নম্বরী কাজের আশ্রয়দাতা চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলে প্রচার রয়েছে। তার আর্শীবাদ থাকায় সহকারী পরিচালক মামুন ধরাকে সরা জ্ঞান করেন। এমন কি প্রধান প্রকৌশলী ও মহাপরিচালককেও যথায়থ সম্মান করেন না।
নৌখাতের গুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারী অফিসে চাকুরী করে কিভাবে মামুন নামে বেনামে ঠিকাদারী করছেন এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অফিসের মধ্যে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন ? কেন তার হাতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সমস্ত কর্মকর্তারা জিম্মি হয়ে আছেন? তার কোন সদুত্তোর মিলছে না। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা এ ক্ষেত্রে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের পদক্ষেপ কামনা করেছেন।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সহকারি পরিচালক মামুনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।