ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা
ইউনানী, আয়ুর্বেদিক শিল্পের রমরমা ব্যবসা নাকি নিম্নমুখী। বিষয়টি নিয়ে শিল্পের সাথে জড়িত অনেকেই এর সত্যতা স্বীকার করে কেউ কেউ কোম্পানী বিক্রি করার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে জানা গেছে। আবার অনেকেই বলছেন, মিটফোর্ডে আগের মতো এখন আর ট্রাক ভরে ঔষধ বিক্রির তেমন সুযোগ নেই। তাদের বক্তব্য কতটা যুক্তিসম্মত তা যাচাই-বাছাই করতে মিটফোর্ডসহ রাজধানীর অলি-গলিতে গিয়ে দেখা যায়, মানসম্মত ঔষধ কোম্পানীর প্রোডাক্ট তেমন বিক্রি না হলেও নকল-ভেজালের অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত কোম্পানীর প্রোডাক্ট ঠিকই বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শিল্প মালিক সমিতির অনেকেই বলছেন, বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দার কারণে ঔষধ তৈরির কাঁচামাল, কেমিক্যাল ও কাগজ-কালির দাম বেড়ে যাওয়ায় ঔষধ উৎপাদনে যে টাকা খরচ হয়, সেই টাকায় বিক্রি করা সম্ভব নয়। আর ডিলাররা যে দামে প্রোডাক্ট ক্রয় করতে ইচ্ছুক, সে দামে বিক্রি করতে হলে পানি, কেমিক্যাল ও ফ্লেভার ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তবুও জনস্বার্থে নিরাপদে নিরাময় ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও তারা এখন ব্যর্থ। কেননা, শতাধিক ঔষধ কোম্পানী ডিলারদের পছন্দ মতো যেভাবে প্রোডাক্ট উৎপাদন করে বাজারজাত করছে, তাতে ঔষধ বাজারে টিকে থাকাই মুশকিল। যে কারণে অনেকেই কোম্পানী বিক্রি করার চিন্তা-ভাবনা করছেন। বাস্তবতার সাথে কিছুটা মিল থাকলেও কেউ কেউ ভিন্ন স্বার্থ হাসিলে ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না বলে হা-হুতাশ করছেন। অথচ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত কোম্পানীগুলো মিটফোর্ডসহ জেলা-উপজেলায় ডিলার নিয়োগ দিয়ে দেদারসে ব্যবসা করছে।
আগে ১০০ মিলির যে কোনো সিরাপ উৎপাদন করতে ১০-১২ টাকা খরচ হতো এবং ১৪-১৫ টাকায় বিক্রি করলে কিছুটা লাভ হতো। এখন সেই সিরাপ উৎপাদন করতে ১৬-১৮ টাকা খরচ হয়। সেখানে কিছু কোম্পানী ১০০ মিলি সিরাপ কিভাবে ১০-১১ টাকায় বিক্রি করে এবং ভিটামিন সিরাপ ৩০ থেকে ৪০ টাকা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর ট্যাবলেট-ক্যাপসুল উৎপাদন ও বাজারজাতে যে কারসাজি চলছে তাতে ভেষজ শিল্পের উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ফলে মানহীন ঔষধ কোম্পানীগুলোর কাছে মানসম্মত ঔষধ কোম্পানী এখন ধরাশায়ী। তবু্ও ব্যবসার স্বার্থে এবং কর্মচারীদের জীবন জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ এক রকম যুদ্ধ করে যাচ্ছে। তারা বলেন, ভেষজ শিল্পের যে সমস্যা এখন চলমান তা সমাধানে ড্রাগ প্রশাসনের কোনো ভূমিকাই দেখা যায় না। বরং মন্দার বাজারে সুযোগ সন্ধানীরা এখনো বেপরোয়া। শিল্প মালিকদের মতামত অস্বাভাবিক কিছু নয়। কেননা, নকল-ভেজাল প্রতিরোধে সাবেক ম্যাজিস্ট্রেট মো. রোকন -উদ-দৌলা, মো. আনোয়ার পাশা, মো. সারওয়ার আলম যে সাহসী ভূমিকা পালন করে গেছেন তা দেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে। তারপরে আর কোনো বড় ধরনের সাফল্যের অভিযান কেউ দেখেনি। মাঝে মধ্যে ডিবি পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে মামলা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করলেও ড্রাগ প্রশাসন এমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি, যাতে বিগত দিনের মতো সাঁড়াশি অভিযান চলমান থাকে। এই সুযোগে নকল-ভেজাল ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্য সেবার নামে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে।
মেসার্স গুড হেলথ ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড ইউনানী:
নতুন পাড়া হেমায়েতপুর সাভার ঢাকা স্মারক নং: ডি.জি.ডি.এ ইউনানী ১৪৭/০৯/২৫৮, তারিখ: ১৫/০৯/২০১৯ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের কারখানা, (০১) হাব্বে হায়াতীন মুরাকাব (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম লুমাটন, (০২) হ্যাকো হায়াতীন মুরাকাব জওয়াহারদাত (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম জিএইচ-ভিট, (০৩) ইভেনিং পিমরোজ (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম ইপিওজি, (০৪) আরব আজীব (তরল) বাণিজ্যিক নাম জিএইচ-২০, (০৫) মরহুম আজিম (মলম) বাণিজ্যিক নাম-টাররাসিল, (০৬) এই ছয়টি পদের বাজারজাতকরণ স্থগিত করা হলো। উক্ত প্রোডাক্টগুলি সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান নির্দেশে ওষুধগুলো বিক্রি বাজারজাত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো বলে নির্দেশনা জারি করেছিলেন। এছাড়াও মালিক আবু মুসার আরেকটি কোম্পানি রয়েছে। যার নাম গুড লাইফ আয়ুর্বেদিক ল্যাঃ লিঃ। লাইসেন্স নম্বর নং (আয়ু)-০৪৪ এবং গুড হেলথ লিঃ ইউনানী এই দুটি কোম্পানির ঔষধ বর্তমানে বাজারে মুড়ির মত চলছে , পিউমিন মাল্টি ভিটামিন ও মাল্টি মিনারেল সিরাপ ৪৫০ মিঃ ডি এ আর নং (আয়ু)-০৫২-এ-০২৩, ভেনাপ্রো ৪৫০ মিঃ ডি এ আর নং (ইউ)-১৪৭-এ-০১৭, এলভা ৪৫০ মিঃ ডি এ আর নং (আয়ু)-০৫২-এ-০৪, জিংকোমিক্স ৪৫০ মিঃ (আয়ু)- ০৫২-এ-০২২, ইকোরেক্স ৪৫০ মিঃ ভি এ আর নং (আয়ু)-০৫২-এ-০৩২,এ সমস্ত প্রোডাক্টে কালার ফ্লেভার ও অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে ঔষধ তৈরি করছে। ওষুধ সেবন করে অনেক রোগীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানা যায়। ডাক্তারদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই প্রোডাক্টগুলো দ্রুত ড্রাগস টেস্টিং ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করলে সত্যতা পাওয়া যাবে।
জিকেফার্মা (ইউনানী) জিকে ফার্মা (ইউনানী)-এর লাইসেন্সের ঠিকানা: স্টেশন রোড, টঙ্গী, গাজীপুর কিন্তু ওষুধের লেবেলের গায়ে লেখা আছে ঢাকা, বাংলাদেশ। ফেসবুকে পেইজ-এ ঠিকানা দেয়া আছে- বনানী, ঢাকা।ক্যানভাস করে যৌনশক্তি বর্ধক হালুয়া বিক্রি করতো। এখন কোম্পানীর মালিক। তিনি ৫০টি প্রোডাক্টের অনুমোদন নিলেও মাত্র কয়েকটি যৌনশক্তি বর্ধক, রুচি বর্ধক ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রক ওষুধ ছাড়া আর কিছুই নেই তার ওয়েবসাইটে। তার উৎপাদিত ওষুধগুলো ফুটপাত ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যায় না। তার প্রধান ব্যবসা যৌনশক্তি বর্ধক অনুমোদনহীন ‘কমান্ড (Command) ও গোল্ডেন লাইফ (Golden Life)’ নামক ঔষধ বিক্রি করা। কমান্ডের দাম ৩ হাজার টাকা, আর গোল্ডেন লাইফসহ পূর্ণ প্যাকেজের মূল্য ৪ হাজার ২শ’ টাকা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রক ওষুধ ডায়কেয়ার সেবনকারীদেও সাথে আলাপ করে জানা গেছে এটা সেবন করলে ২/৩ দিনের মধ্যেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে ডায়াবেটিস এমন মাত্রায় বেড়ে যায় যে, ইনসুলিনেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হয় না। ডায়কেয়ারের গোমর ফাঁস হয়ে যাবার পর নতুন ‘হলি ডাইকিউর (HOLY DICURE) নামে একই ওষুধ ফুটপাতে ছেড়েছে।
ন্যাচার ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) লিঃ পুদিনা-এস, এন মুন্ইশ, এন জিংগো, এন ভিট-বি, রুচি ভিট-বি, নিশাত রেইনবো, ভিয়েক্স নামক ঔষধ সমূহের লেভেল কার্টুনের চুরান্ত অনুমোদন ব্যতিত উৎপাদন ও বাজারজাত করছে উক্ত নেচার ল্যাবরেটরিজ ইউনানী এর কারখানা মিরপুর পলাশ নগর এবং মিরপুর স্টেডিয়ামের পিছনে নেচার ল্যাবরেটরিজ ইউনানীর মালিক খলিল একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া করে সেখানে নেচার ল্যাবরেটরিজ ইউনানীর গোপন একটি ঔষধের ডিপো বানিয়েছেন এখান থেকে ভেজাল ও নিম্ন। দীর্ঘদিন যাবৎ অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি করে যাচ্ছেন। এই কোম্পানিটিকে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ওষুধ প্রশাসন যৌথ অভিযানে ৩০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। তারপরও আগের থেকেও বেশি পরিমাণ নিম্নমানের ও ভেজাল ওষুধ তৈরি অব্যাহত রেখেছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ায় ওষুধ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা মনে করেন, এই ওষুধ কোম্পানিতে দ্রুত সমস্ত প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরি থেকে উত্তোলন করে ল্যাবে পরীক্ষা করলে এর সত্যতা মিলবে। এর আগে বেশ কয়েকটি পোডাক্ট নেগেটিভ শনাক্ত হয়েছে তারপরও থেমে নেই সুচতুর কোম্পানির মালিক খলিলুর রহমানকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে সচেতন মহল দাবি করেন।
নারায়ণগঞ্জের সুরমা ফার্মাসিউটিক্যালসের (ইউনানী) আরক পুদিনা (সুরমিন্ট), সেব-এস (শরবত সেব) নামক ৪৫০মিলি সিরাপ রাজধানীসহ সারাদেশে মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে। এর কারণস্বরূপ জানা যায়, উক্ত ভিটামিন সিরাপ দুটিতে মাত্রাতিরিক্ত গবাদিপশু মোটাতাজা জাত করন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে কারন এই দুটি ভিটামিন সিরাপ সেবন করলে অতিদ্রুত স্বাস্থ্য বৃদ্ধি, রুচি বৃ্দ্ধি হয় যে কারনে জনসাধারন এই দুটি ভিটামিন সিরাপ কিনতে ঔষধের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ এলাকার দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা একাধিকবার সুরমা র্ফামাসিউটিক্যালস এর উৎপাদিত ভিটামিন সিরাপ আরক পুদিনা (সুরমিন্ট), সেব-এস (শরবত সেব) এর গুনগত মান যাচাই এর জন্য ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে উল্লেখিত দুটি ভিটামিন ঔষধের নমুনা পাঠিয়ে ও অধ্যবধি নমুনা পরিক্ষার রিপোর্ট হাতে পায়নি। কারণস্বরূপ জানা যায়, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরির কর্মকর্তাদের নিয়মিত অবৈধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে সুরমা ফার্মাসিউটিক্যালস এর মালিক ফিরোজ।
এস, এস ল্যাবরেটরিজ ঢাকা বাংলাদেশ ক্যারিপাস ১০০ মিলি শরবত বাসক, রিভাট ৪৫০ মিলি শরবত ভিটামিন, রুচি রান ৪৫০ মিলি শরবত ভিটামিন, স্টেটিন ক্যাপসুল (সেক্সমল), চিনালিয়া ক্যাপসুল (বক্স), রিসটা ক্যাপসুল (বক্স), পুদিনা ৪৫০ মিলি শরবত ভিটামিন।এই ওষুধ গুলোর গুণগত মান নিম্নমানের এবং মানব দেহের মারাত্মক ক্ষতি কারণ কেমিক্যাল মিশ্রিত যা সেবন করলে লিভার কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতি হতে পারে। এবং সমস্ত কোম্পানিতে সঠিক ভাবে ওষুধ তৈরি করেন না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। হাকিম কবিরাজ কাগজ-কলমে আছে কিন্তু বাস্তবে এগুলো তৈরি করে ডেলি লেবার বা মালিক নিজেরা।
হ্যাপি ল্যাবরেটরীজ উৎপাদন লাইসেন্স নং: (ইউ) ০৩৯ হ্যাপি-জেড ৪৫০মিঃ লিঃ সিরাফ ডি.এ. রেজি নং: ৩৯-এ-০৪৪, ব্যাচ নম্বর- ১৭, মূল্য ৪০০ টাকা, হ্যাপিটন ন্যাচারাল ভিটামিন সিরাপ ৪৫০ মিঃলিঃ ডি এ আর নং (ইউ) ৭১-এ-১২ ব্যাচ নং-১৭, মূল্য ৩০০ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করছে। তার কোম্পানির হাকিম কবিরাজ নামমাত্র রেখেছেন কারখানায় গেলে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এছাড়া গাছ গাছড়ার বদলে মিটফোর্ড থেকে খোলা বাজারের কেমিক্যাল কিনে ঔষধে ব্যবহার করছে বিশ্বস্ত সূত্রে নিশ্চিত করেছেন।
হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী): এইচপি তুলসী ৪৫০ মিলি, এইচপি তুলসী ১০০ মিলি, ট্যাবলেট হামজা রুচিক্যাপ, ক্যাপসুল পেঙ্কুল, ক্যাপসুল হামজা গ্যাস্কুল, সিরাপ হামজাপ্লেক্স (শরবত আমলা), ট্যাবলেট সুপার ক্যাপ (ভিটামিন এ টু জেড), ক্যাপসুল নিমভিট, ট্যাবলেট স্লিফিট, হামজাক্যাল- ডি, সিরাপ কফকুল, ক্যাপসুল নোএজমা, সিরাপ জিনবিট ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), সিরাপ জিনবিট ১০০ মিলি (শরবত জিনসিন), হালুয়া গ্রেফোট, সিরতাপ এয়াপেলটন ৪৫০ মিলি, সিরাপ সিইলিভ। যৌন উত্ত্বেজক ওষুধ সিলড্রেনাফিন, সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেট নামক ভায়গ্রার উপাদান ব্যবহার করছে বলে ও ওষুধ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত একটি সূত্রের দাবি। জ্বরের ওষুধে প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে ওষুধে এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিওপ্রাজল এবং ব্যথা ও ব্যথানাশক ওষুধে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম বিপি নামক এলোপেথিক ওষুধের কাচা মাল ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে। এ ওষুধের বিষয়ে ভোক্তা ও হাকিম, কবিরাজ, ইউনানী বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, এই ওষুধগুলোর মান খুবই খারাপ যা মানুষের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী হতে পারে। এ বিষয়ে ওষুধ কোম্পানির মালিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে এ বিষয়টি অস্বীকার করে এবং এ নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। ইউনানীর সমিতির উচ্চপদস্থ কর্মকতার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, হামজা ল্যাবরেটরীজ তাদের নতুন সদস্য তাই তাদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানা নেই। তবে এদের বিরুদ্ধে যদি কিছু লেখা হয় তাহলে এতে তাদের কোন আপত্তি নেই। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, হামজা সহ যে সমস্ত কোম্পানীর নামে খবর প্রকাশিত হয় তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা গ্রহণ করছি ও অব্যাহত রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
এস এ ল্যাবরোটরীজ (ইউনানী) একই ডিএআর নম্বর ব্যবহার করে শরবত শেব দুই নামে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে যার ট্রেড নাম হিটোন (শরবত শেব) ও আপেল-জি (শরবত শেব), হেপঠো, ম্যাগফেরল, ম্যাগোজিন (শরবত জিনসিন), মিকোরেক্স (শরবত ছদর) নামক ঔষধ সমূহ লেবেল কার্টুনে চূড়ান্ত অনুমোদন ব্যাতিত উৎপাদন ও বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ উটেছে। আরো জানা যায় যে কোম্পানীটি লাইসেন্স নবায়ন না করে কোম্পানীর মালিক নিম্নমানের কেমিক্যাল ব্যাহার করে দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। এস এ ল্যাবরেটরীজ ইউনানী: গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার কোম্পানিতে গোপনে অন্য কোম্পানির মাল তৈরি করে। এ সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ওষুধ প্রশাসনে সংশ্লিষ্ট ফাইল অফিসারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
জুরাইনের দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এর বিরুদ্ধে একই ডিএআর নম্বর ব্যবহার করে ২ নামে একই ভিটামিন সিরাপ প্রস্তুত ও বাজারজাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও উক্ত কোম্পানী এনজয় প্লাস ক্যাপসুল, এনজয় প্লাস সিরপ, রুচিটন সিরাপ, দি-টন ও দি-গোল্ড নামক ট্যাবলেট দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ ভাবে বাজারজাত করছে। এই বিষয়ে অভিযোগ এনে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকের কাছে বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা হলেও কতিপয় কর্মকর্তার দুর্নীতির কারণে দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ সকল বিষয় নিয়ে জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে ধারাবাহিকভাবে ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে সত্য ঘটনা তুলে ধরার পর মাঝে মধ্যে ওষুধ প্রশাসন কোম্পানির বিরুদ্ধে আই ওয়াশ করে থাকেন বলে জানা যায়। ফলশ্রুতিতে কিছু দিন পর থেকে নিম্নমানের ওষুধ তৈরি করতে মহাব্যস্ত হতে দেখা যায় কোম্পানিগুলোকে।
দিহান ল্যাবরোটারীজঃ সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তার নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে ট্যাবলেট ক্যাপসুল তৈরি বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। আয়ুর্বেদিক শিল্প সমিতির দিহান এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কিছু কোম্পানির জন্য আমাদের মানসম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আমরাও চাই ঔষধ ব্যবসা সঠিকভাবে পরিচালনা করাই উচিত বলে আমরা মনে করি। দিহানের মালিকের জিএফসি গাইডলাইন অনুসারে আপনি ওষুধ তৈরি করেন কিনা তিনি বলেন আমাদের এত কিছু আইন-কানুন মানা সম্ভব না।
জুরাইন জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত ওষুধের নামে বাহারী মোড়কে ভয়ংঙ্কর পাশ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওষুধ বাজারজাত করার অভিযোগ উঠেছে। ওষুধে ডেক্সামেথাসন, সিপ্রোহেপ্টাডিন, থিয়ভিট (গাবাদী পশু মোটা তাজা জাত করণ (কেমিক্যাল) ও ক্যালসিয়াম ক্যার্বনেট ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যৌন উত্তেজক ওষুধ সামগ্রীতে সিলড্রেনাফিন, সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেট নামক ভায়গ্রার উপাদান ব্যবহার করছে বলেও ওষুধ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। একটি সূত্রের দাবি, মুনইশ, দশ্মুলারিষ্ট, আমলকী প্লাস রসায়ন, ভারজিটন, জি-যমানী, জিওভিটা, ভিগো ওষুধের মধ্যে পাওয়া গেছে। জ্বরের ওষুধে প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে ওষুধে এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিওপ্রাজল এবং ব্যথা ও ব্যথানাশক ওষুধে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম বিপি নামক এলোপেথিক ওষুধের কাচামাল ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। অথচ বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ফর্মুলারী এবং বাংলাদেশ ইউনানী ফর্মুলারীতে এলোপথিক ওষুধের কাঁচামাল বা কোন প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহারের নিয়ম নেই। ইউনানী-আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ এসব কেমিক্যালের ব্যবহার প্রতিনিয়ত করেই চলছে। ভাবসাবে মনে হয়, রাজধানী জুরাইন এলাকাটা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আওতামুক্ত। যেন উক্ত এলাকায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। থাকলে দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এবং জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে এমন সব ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করতে পারত না। অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রহস্যজনক নিরবতা পালন করছেন। কর্মকর্তাদের এই অত্যধিক নিরবতাকে ভিন্ন চোখে দেখছেন সচেতন মহল।
চিত্রা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) আশুলিয়া সাভার ঢাকাঃ ভেজাল ও নিম্নমানের উৎপাদন ও বাজারজাত করছে এমন অভিযোগ বহুদিনের। আমলকী, চিত্রাভিট, চিত্রা পুদিনা, তুলসি, সেবটন, চিত্রাকফ, চিত্রাটন, জিনসিন ৪৫০মিলি ও ১০০ মিলি।মাত্রাতিরিক্ত গবাদিপশু মোটাতাজা জাত করন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা যায়। কাশির ওষুধ চিত্রাকফ ও জিনসিন মাত্রাতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। সরজমিনে কারখানা থেকে ওষুধ সংগ্রহ করিলে ও ওষুেধর নমুনা পরীক্ষা করলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে। চিত্রা ল্যাবরেটরী মালিকের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওষুধ প্রশাসনের উপ-পরিচালক আমার কোম্পানিটি করে দিয়েছে। পরবর্তীতে উপ-পরিচালককে ফোন দিলে তিনি বলেন, ওই মালিককে আমি চিনি না কোম্পানি করে দেয়ার প্রশ্নে ওঠে না অনেক সময় আমাদের নাম ব্যবহার করে থাকে অনেক কোম্পানি। ঘটনা মোটেই সত্য না।
মডার্ন ল্যাবরেটের (ইউনানী) নরসিংদী বাংলাদেশ হরমোক্স ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), পেটাজেন ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), এনিফল ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), ক্যারামেক্স ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), ভেসিকফ ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন)। মডার্ন ল্যাবরেটরি ইউনানী বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওষুধের লেবেল কার্টুনের চূড়ান্ত অনুমোদন নাই। বাচ্চার ছবি ব্যবহার করে প্যাকেটে দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করে ওষুধ কম মূল্যে বিক্রি করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। সত্যতা মিলবে কারখানা পরিদর্শন করে সঠিক তদারকি করলে দেখা যাবে সম্পূর্ণ নিম্নমানের কেমিক্যাল দিয়ে ওষুধ তৈরি করছেন এবং অদক্ষ শ্রমিক দিয়েই জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
বেসিক ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) বেসিভিট (৪৫০ মিলি শরবত ভিটামিন), বেসি-প্রিফা শরবত, গাইনিম্যাক্স ৪৫০ মিলি (শরবত গাইনি), বেসিলিভ ৪৫০ মিলি (শরবত লিভাবটনিক), বেসিরিন ৪৫০ মিলি ( শরবত বুয়ুরি), হারবিকফ ১০০ মিলি (শরবত বাসক), হরমোবা ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), বেসি-গ্যাস ২৫০ মিলি (শরবত সাদা), আলসি পেপ ক্যাপসুল বক্স, রিউক্যাপ ক্যাপসুল বক্স (বাত বেদনী), ভায়ারেন্ট ক্যাপসুল পট ৩০ পিস, বেসিক্যাল ট্যাবলেট ক্যালসিয়াম, বেসি ট্যাব ট্যাবলেট রুছিবান, বি-নিশি ক্যাপসুল (হাবেব নিশাদ)। দীর্ঘদিন যাবৎ যৌন উত্তেজক ক্যাপসুল ভিটামিন গ্যাসের ওষুধ তৈরি করে যাচ্ছেন ওষুধের গুণগত মান একেবারে নিম্নমানের। মিটফোর থেকে সস্তা ক্যামিকেল ক্রয় করে ওষুধ তৈরি করছে এ ধরনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তা জানান এই কোম্পানির বিরুদ্ধে আমাদের কাছেও অনেক অভিযোগ আছে বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।
রেনিক্স ইউনানীল্যাবরেটরিজ ঢাকা বাংলাদেশ কন্ড -ফ্রি ১০০ মিলি (শরবত বাসক), আর-মন্স ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), পার্সলে ৪৫০ মিলি (শরবত ভিটামিন), প্রো-সিড ২৫০ মিলি (শরবত এন্টাসিড), আর-রুচিল ৪৫০ মিলি (শরবত ভিটামিন), আন-সিফা ৪৫০ মিলি (শরবত বলারিষ্ট), আপেলন ৪৫০ (মিলি শরবত ভিটামিন), আর-কুলি ৪৫০ (মিলি শরবত মাল্টি ভিটামিন), ভোজার ৪৫০ (মিলি শরবত দিনার), ভাইক মনি ১০০ মিলি, ভ্যালরিয়া ক্যাপসুল পট ৩০ পিস, ফ্লিসকাট ক্যাপসুল ৩০ পিস, ভাইম্যান ক্যাপসুল ৩০ পিস (স্লিম), ইন্সট্যাঁন-২ ক্যাপসুল ৩০ পিস, কেরাটম ক্যাপসুল ৩০ পিস। এই ওষুধগুলি যৌন উত্তেজক কেমিক্যাল ও ডেক্সামেথাসন, ওমিপ্রাজল নিম্নমানের কেমিক্যাল তৈরি থাকে বলে জানা যায় এবং লেভেল কার্টুনের চূড়ান্ত অনুমোদন নয় বলে জানা যায়।